শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩
গাজী আরিফুর রহমান, বরিশালঃ
সরকারি নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করেই নিজের ইচ্ছে মতো বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা সহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠি সদর উপজেলার টাইগার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের যেনো অভিযোগের শেষ নেই ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইতি রানীর বিরুদ্ধে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও বুধবার ( ৫ এপ্রিল ) ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইতি রাণী পৌনে একটায় আসেন বলে অভিযোগ তুলেছেন আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, “টাইগার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইতি রানী প্রতিনিয়তই দেরি করে স্কুলে আসেন। কোন কোন দিন আমরা দেখি সাড়ে ১২ বারোটার পরেও স্কুলে আসেন তিনি। আজ বুধবার তিনি পৌনে একটায় এই রাস্তা দিয়েই স্কুলে প্রবেশ করেছেন। আবার মাঝেমধ্যে এসে একটু পরেই বের হয়ে চলে যেতে দেখা যায় তাকে। তাঁর এমন কর্মকান্ডে আমাদের মনে হয়না যে বিদ্যালয়ের প্রতি তাঁর কোন মনোযোগ রয়েছে। প্রাধান শিক্ষকের এমন উদাসীনতা। বিদ্যালয়ে অনিয়ম করে আসা যাওয়ার কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা একদমই ভেঙে পড়েছে। ক্রমাগত কমতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সংখ্যা। শুধু মাত্র সহকারী শিক্ষকদের তৎপরতায় দায়সারা ভাবে চলছে বিদ্যালয়টি। ”
নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলেন, “আমারা মাঝেমধ্যে বিদ্যালয় গেলে প্রধান শিক্ষককে অনুপস্থিত পাই। আবার উপস্থিত থাকলেও কখনো কখনো দেখা যায় প্রাকের শিশুদের ক্লাশ রুমে ঘুমিয়ে থাকেন। বিদ্যালয়টি উনি ওনার ইচ্ছেমত পরিচালনা করেন। আজকেও সকল সহকারী শিক্ষকদের দুইটার সময় বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক। নিয়মিত তদারকির অভাবে প্রধান শিক্ষক এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা।”
মুঠোফোনে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইতি রানীর কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ আমি প্রতিনিয়ত যথা সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকি। বুধবার তিনি কয়টায় বিদ্যালয়ে এসেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রথমে থমকে জান তিনি। পরবর্তীতে জুয়েল নামের এক ব্যক্তির কাছে জিজ্ঞেস করে জবাবে বলেন আজকেও আমি সাড়ে নটায় বিদ্যালয় এসেছি। দুইটার সময়ে সকল সহকারী শিক্ষকদের ছুটি দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, অত্র বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে সকল সহকারী শিক্ষকদের ওই শিক্ষার্থীকে দেখতে পাঠানো হয়েছে। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে সকল সহকারী শিক্ষকদের বাইরে পাঠানো যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মেলেনি কোন সদুত্তর। ”
এবিষয়ে কথা হয় ঝালকাঠি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ( টিও ) খন্দকার জসিম আহমেদের সাথে তিনি বলেন, “কোন ভাবেই বিদ্যালয়ে দেরি করে আসা যাবেনা। এবং বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে সকল সহকারী শিক্ষকদের বাহিরে রাখা যাবে না। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বলেন তিনি।”