মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
মোস্তাফিজুর রহমান সুজনঃ
প্রতারনার আশ্রায় নিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতে না পেরে পটুয়াখালীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রভাবশালী ঠিকাদারী পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর অভিযোগে মোঃ আবদুল্লাহ আল মুছাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
পটুয়াখালী সদর থানায় মামলা নং ১৫ তারিখ ১০/২/২৩ইং ওই মামলায়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারকৃত আবদুল্লাহ আল মুছা বর্তমানে পটুয়াখালী কারাগারে থাকলেও বাকী আসামীরা পলাতক থাকায় মামলার বাদীসহ তার আত্মীয় স্বজনরা আতংকে রয়েছে।
মামলার বিবরনে প্রকাশ, গ্রেপ্তারকৃত আবদুল্লাহ আল মুছার গ্রামের বাড়ী পার্শবর্তী জেলা বরগুনায়। সেও পেশায় ঠিকাদার। কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক ভাবে না পেয়ে প্রভাব খাটিয়ে প্রতারনার পথ বেছে নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ একচেটিয়েভাবে করতে থাকে মুছা নামের ওই ঠিকাদার।
পরে প্রতারনা ও প্রভাব খাটানোর বিষয়টি প্রকাশ পেলে মামলার বাদী প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার নূর ই এলাহি আলম ওরফে ইভান এবং তার বাবা ঠিকাদার মিজানুর আলম ওরফে স্বপন মৃধাসহ বাদীর স্ত্রীকে জড়িয়ে মিথ্যা অসত্য ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার চালায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এক পর্যায়ে আসামী মুছা নিজেই তার ব্যবহৃত ফেইস বুক আইডির মাধ্যমে গত কয়েকদিন ধরে এরকম মিথ্যা অসত্য তথ্য দিয়ে ফেইসবুকে অপপ্রচার চালাতে থাকে। কয়েকদিনের মধ্যে বিষয়টি বাদীর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি আইনের আশ্রায় নেন দায়ের করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর কেচো খুজতে বেরিয়ে আসে সাপ।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায় যে, ওই মামলার প্রধান আসামী মুছাসহ তার চার বন্ধু মিলে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহি প্রকৌশলী কাইসার আলমের সাথে গোপনে আতাত করে তার বিরুদ্ধে নানাবিদ ষড়যন্ত্র করে আসছে অনেক দিন ধরে।
যার প্রমান স্বরুপ তাদের দুইজনের কথোপকতন আসামীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে। মূলতঃ ওই কর্মকর্তার ইন্দনেই আসামী মুছা তার ও তারসঙ্গীরা ঠিকাদার ইভান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এহনও ন্যাক্করজনকভাবে নোংরা ভাষায় মিথ্যা অসত্য তথ্য প্রচার করিয়েছে।
এ ব্যপারে মামলার বাদী ইভান জানান, বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ কাইসার আলম সেখানে কর্মরত থাকাকালীন সময় আসামী আবদুল্লাহ আল মুছা, মাইন উদ্দিন আসাদ, অলি আহমেদ এবং সাদ্দাম হোসেন মিলে অবৈধ উপায়ে ওই দপ্তরের বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নিতেন।
এসব কাজের জন্য ব্যবহার করা হতো ওই কর্মকর্তার স্ত্রীকে। কিছুদিন পরে প্রকৌশলী মোঃ কাইসার আলম পদোন্নতি পেয়ে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর পদে আসীন হলে তার ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করেন আসামীগনরা। এরপর নতুন কর্মকর্তা বরগুনায় যোগ দিলে আসামীরা আর আগের মত অধৈভাবে কোন কাজ নিতে পারেননি।
যেকারণে তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এতে দিশেহারা হয়ে ওই আসামীরা পরিকল্পিতভাবে বরগুনার বর্তমান নির্বাহি কর্মকর্তা ও পটুয়াখালীর প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার মিজানুর আলম ও তার ছেলে ইভান এবং আবুল কালাম আজাদ এদের বিরুদ্ধে নানাবিদ কুৎসা রটানোর জন্য প্রোপাগন্ডা ছড়াতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিপূর্বে কাইসার আলম বিভিন্ন উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। যেটি অফিসিয়াল ভাবে প্রমানিত হলে কাইসারকে তাৎক্ষনিক ঢাকা প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর বিভার ম্যানেজমেন্ট পাউবো শাখায় বদতলি করা হয়।
মূলত এই বদলির কারণেই ক্ষুব্দ হয়ে আসামীদের দিয়ে ঠিকাদার ইভান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ন্যাক্করজনক ভাবে অপপ্রচার ও অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।
সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, আসামীকে রিমান্ডে এনে জিঙ্গাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন জানান হয়েছিল কিন্তু বিজ্ঞ আদালত তার রিমান্ড শুনানি নামঞ্জুর করেছেন।
তিনি জানান, অপর আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। যদিও তাদের বাড়ীর ঠিকানা বরগুনা জেলায় কিন্তু ঠিকাদারী কাজের সুবাদে তাদের সাথে পটুয়াখালীর লোকজনও জড়িত থাকতে পারে। আমরা সেবিষয়টিও নজরে রাখছি।