সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
আকরামুল ইসলামঃ
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার পাইকগাছায় ৯ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা, ইউনিয়ন পরিষদ,পুলিশ ক্যাম্প,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে কপিলমুনির বদ্ধভূমিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন সহ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
বিকেলে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির এ্যান্ড কলেজিয়েট স্কুলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম,কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার, ক্যাম্প পুলিশের আইসি ইন্সপেক্টর এমদাদুল হক,অধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ বাহার,মুক্তিযোদ্ধা জামাল হোসেন ও তার সহকর্মী মুক্তিযোদ্ধারা, উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস, প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার সম্পা, কপিলমুনি প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আঃ রাজ্জাক রাজু সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি উপজেলার বানিজ্য নগরী কপিলমুনি বাজারে রায় সাহেব বিনোদ বিহারীর সাধুর সুরক্ষিত বাড়ী রাজাকার ঘাটি গড়ে তোলেন। এখানে টর্সার সেল হিসেবে নারী ধর্ষন ও হত্যা সহ মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে নির্মমভাবে হত্যা করা কপোতাক্ষ নদে ফেলে দিত।
যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে মুক্তিবাহিনী কপিলমুনির রাজাকার ঘাটি দখল মুক্ত করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে নৌ কমান্ডো বীর প্রতিক লেঃ গাজী রহমতুল্লাহ দাদু ভাই, এ্যাডঃ সম বাবর আলী, কামরুজ্জামান টুকু,মোড়ল আব্দুস ছালাম, ইউনুস আলী ইনু, শেখ শাহদৎ হোসেন বাচ্চু, গাজী রফিক, আবুল কালাম আজাদ সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে ৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে রাজাকার বাহিনীর উপর আক্রমন করে। শুরু হয় মুখোমুখি যুদ্ধ। টানা ৫৮ ঘন্টার সম্মুখযুদ্ধের পর ৯ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
এ যুদ্ধে আশাশুনির গাজী আনছার আলী ও খুলনা রুপসার সেনের বাজারের আনোয়ার হোসেন শহীদ হয়। আহত হন গাজী রুহুল আমীন ও তোরাব সহ অনেকে। রাজাকারদের পরাজয়ের খবরে চারিদিক দিয়ে এলাকার মুক্তিকামী মানুষ ছুটে আসে। রাজাকার ঘাটি ঘিরে ফেলে শতাধিক রাজাকারকে আটক করে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির মাঠে আনেন। দেশের ইতিহাসে এ প্রথম গণমানুষের দাবীর প্রেক্ষিতে গন আদালতের রায়ে প্রকাশ্যে রাজাকারদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।