সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মোস্তাফিজুর রহমান সুজনঃ
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে ভাস্কর্য বানাতে শুরু করেছিলেন দিনমজুর এই সাহেব আলী। ৭১এর বর্বরোচিত ও স্বাধীন বাংলার ঐতিহাসিক নানা দৃশ্যপট নিয়ে ৬৬টি ভাস্কর্য বানাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
যে ভাস্কর্য বানাতে গিয়ে তার বসত-ভিটে বেচে দিতে হয়েছে। অবশিষ্ট ৫টি ভাস্কর্য নির্মানের আগে ভয়াবহ ক্যান্সার তাঁর প্রাণ কেরে নিয়েছেন। র্দীঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ০২ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজে তার মৃত্যু হয়েছে।
সাহেব আলীর ছেলে হাসান খান এমন তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন। মৃত্যুর আগে সাহেব আলীর খাদ্য নালিতে নিউমার সৃষ্টি হয়ে; পরে তা ক্যন্সারে রুপান্তরিত হলে অসুস্থ্য হয়ে পরেন তিনি।
ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও আর্থিক সংকটে উন্নত চিকিৎসা দিতে সক্ষম হয়নি পরিবার। পটুয়াখালী জেলা সদরের আউলিয়াপুরের অজোপাড়া গায়ের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছিলেন নিরক্ষর সাহেব আলী।
নব্বইয়ের দশকে মুন্সিগঞ্জের একটি চালের মিলে কর্মরত অবস্থায় এক বিরাঙ্গনা সহকর্মী রাহিমার মুখে ৭১ এর বর্ননা শোনেন সাহেব আলী। এতে ভাস্কর্য বানাতে উদ্বুদ্ধ হন তিনি।
পরে বাড়ী এসে ভাস্কর্য বানানোর নিরব সংগ্রামে নামেন নিরক্ষর এই দিনমজুর। ভিন্ন এই শিল্পায়নের রুপ দিতে বসত-ভিটে বিক্রি করেছেন তিনি। অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার নিয়ে ভাঙা ঘরেও থেকেছেন।
ধার-দেনার জর্জরিত হলেও বন্ধ করেনি ভাস্কর্য নির্মানের। নিরক্ষর হাতে সিমেন্ট-বালুর মিশ্রনে মুক্তিযুদ্ধের বর্বরোচিত ৬৬টি স্থীর চিত্র তুলে ধরেছিলেন নিজ বাড়ীর আঙিনায়। যা দেখতে উপচে পড়া ভীর জমাতেন মানুষ গুলো। বাকি ৫টি ভাস্কর্য র্নিমান শেষ না করতেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।
সাহেব আলী নির্মিত ভাস্কর্যে রয়েছে-শেখ মুজিবের বজ্রমুষ্ঠি এবং তাঁর জ্যেষ্ঠ আঙ্গুলে স্থাপন করেছিলেন স্বাধীন বাংলাকে, বীর যোদ্ধার পদদলিত (পাক বাহিনী)কাল নাগ,১৫আগষ্টের ভয়াবহ বুলেট, ২১ফেব্রুয়ারী,১৬ ডিসেম্বর ,৭ র্মাচ,২৬ শে মার্চ,৫২‘র ভাষা আন্দলোনসহ মোট ৬৬টি ভাস্কর্য। নিজ আঙিনায় ফুটিয়ে তুলছেন স্বাধীনতার রক্তাত্ত স্মৃতি গুলো।