সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
নিউজিল্যান্ড ধূমপানমুক্ত দেশ গড়ার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বলা হচ্ছে, এটি বাস্তবায়িত হলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে দেশে আর ধূমপায়ী থাকবে না। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) নিউজিল্যান্ড সরকার ধূমপানবিরোধী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিকল্পনাটি আগামী বছর আইনে পরিণত হতে পারে। তা হলে আজকের শিশুরা ভবিষ্যতে ধূমপানের সুযোগ পাবে না।
নিউজিল্যান্ডের সহযোগী স্বাস্থ্যমন্ত্রী আয়েশা ভেরাল এক টুইটে জানান, নিউজিল্যান্ড ধূমপানমুক্ত ভবিষ্যতের দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। ‘স্মোক ফ্রি ২০২৫ অ্যাকশন প্ল্যান’ এর অংশ হিসেবে, তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কয়েকটি সাহসী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবে।
By going smokefree, we could live in a country where our tamariki spend more quality years with their tupuna, we reduce the number of high-risk pregnancies, fewer people are in hospital with diseases and people have more money to spend on the things they need and enjoy.
— Ayesha Verrall (@drayeshaverrall) December 8, 2021
নিউজিল্যান্ডে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য বর্তমানে সিগারেট নিষিদ্ধ। তবে ২০২৭ সাল থেকে এই বয়সসীমা আরও কমানো হবে। যাদের বয়স তখন ১৪ বছর হবে, তাদের আর সিগারেট কেনা বৈধ হবে না। শুধু তাই নয়, লাইসেন্সপ্রাপ্ত সিগারেট বিক্রেতার সংখ্যা ও নিকোটিনের মাত্রা ধারাবাহিকভাবে কমানো হবে।
আগামী বছরের জুনে নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে তামাকমুক্ত প্রজন্ম আইন পেশ করা হবে। দেশটির সরকার ২০২২ সালের শেষ নাগাদ এর বাস্তবায়ন শুরু করতে চায়।
আগামী বছরের জুনে নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে তামাকমুক্ত প্রজন্ম আইন পেশ করা হবে।
একটি বিবৃতিতে আয়েশা ভেরাল বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে তরুণরা কখনই ধূমপান শুরু না করে। তাই তাদের কাছে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বা সরবরাহ করাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করব।’
বর্তমানে ১৫ বছরের বেশি বয়সী নিউজিল্যান্ডের ১১.৬ শতাংশ ধূমপানে আসক্ত। তবে মাওরি আদিবাসীদের মধ্যে এই হার ২৯ শতাংশ। তাই আইনটি পাস করার আগে নিউজিল্যান্ড সরকার একটি মাওরি স্বাস্থ্য টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে পরামর্শ করবে।
বর্তমানে ১৫ বছরের বেশি বয়সী নিউজিল্যান্ডের ১১.৬ শতাংশ ধূমপানে আসক্ত।
তামাকের খুচরা বিক্রয়ে নিউজিল্যান্ড বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক নিষেধাজ্ঞাযুক্ত দেশ। প্রথম স্থানে রয়েছে ভুটান, যেখানে সিগারেট বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়াতেও তামাকবিরোধী কঠোর আইন রয়েছে। ২০১২ সালে আজিরা সিগারেটের প্লেইন প্যাকেজিং বাধ্যতামূলক করার জন্য বিশ্বের প্রথম দেশ হয়ে ওঠে।
ধূমপানের কারণে নিউজিল্যান্ডে প্রতি বছর কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষ মারা যায়, যা এটিকে দেশে মৃত্যুর সবচেয়ে প্রতিরোধযোগ্য কারণ করে তোলে। সেখানে পাঁচজন ধূমপায়ীর মধ্যে চারজন ১৮ বছর বয়সের আগেই ধূমপান শুরু করে।
ধূমপানের কারণে নিউজিল্যান্ডে প্রতি বছর কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষ মারা যায়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবেই নিউজিল্যান্ডের নতুন তামাক বিরোধী প্রস্তাবে খুশি। তবে প্রকাশ্যে সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ হলে কালোবাজারি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।