মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩
হুমায়ুন কবীর, রাজশাহীঃ
রাজশাহীতে চুরির অপবাদ দিয়ে হাত-পা বেঁধে মো: শফিকুল ইসলাম জনি (২৭) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত শফিকুল ইসলাম জনি রাজপাড়া থানাধীন চন্ডিপুর এলাকার মো: সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তিন ভায়ের মধ্যে ছোট ভাই ছিলেন নিহত জনি। সে সাহেব বাজার কাপড়পট্টি মঞ্জুর ক্লথ স্টোর এর কর্মচারী ছিলেন। নিহত শফিকুল ইসলাম জনির লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) এর মর্গে আছে বলে জানিয়েছেন নিহতের মেজভাই রনি।
নিহতের ভাই রনি জানান, তার ভাই শফিকুল ইসলাম জনি গত ৫-জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত্রি ১২টার সময় সাহেববাজার কাপড়পট্টি মঞ্জুর ক্লথ স্টর দোকান লাগিয়ে রিক্সা যোগে বাসায় আসছিলেন। এ সময় পূর্বশত্রুতার জের ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক পার হয়ে খ্রীষ্টিয়ান মিসন হাসপাতালের পূর্বে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা মাওলা এন্টার প্রাইজ ও মাওলা এ্যালিগ্রোর মালিক মাওলা বাবু তার ভাই সাইন ও তার মাওলা এ্যালিগ্রো-৩ এর নাইটগার্ডসহ ৫/৬ জন মিলে আমার ভাইকে রিক্সা থেকে নামিয়ে তার মাওলা এ্যালিগ্রো-৩ এর কাছে একটি লাইটের খাম্বায় হাত-পা বেঁধে রাত দুইটা পর্যন্ত লোহার রড ও বাঁশ দিয়ে পেটাতে থাকে।
এক পর্যায়ে আমার ভাই শফিকুল ইসলাম জনি ঞ্জান হারিয়ে ফেললে তারা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যায়। ৬-জানুয়ারি শুক্রবার শফিকুল ইসলাম জনি আহত অবস্থায় বাসায় ফিরে এসে কাউকে কিছু না বলে ঘুমিয়ে পরে। পরের দিন ৭ জানুয়ারি শনিবার সকালে তার বুকে ব্যাথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সে সময় শফিকুল ইসলাম জনি তার সাথে গত ৫ জানুয়ারি ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ননা দেয়। এর পরে রাত্রি ১১টা ৪৫মিনিটে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ভাই শফিকুল ইসলাম জনি মৃত্যু বরণ করেন। তিনি তার ভায়ের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চন্ডিপুর এলাকার শফিকুল ইসলাম জনি নামে একজন মারা গেছে ।
লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। তার পরিবারের লোকজন তাকে মাওলা এন্টার প্রাইজ ও মাওলা এ্যালিগ্রোর মালিক মাওলা বাবু তার ভাই সাইন ও তার মাওলা এ্যালিগ্রো-৩ এর নাইটগার্ডসহ ৫/৬ জন মিলে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছিলেন। আমি থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তিনি যতটুকু তদন্তে পেয়েছেন তাতে নিহত শফিকুল ইসলাম জনি মাওলা এ্যালিগ্রোর মালিক মাওলা বাবুর মাওলা এ্যালিগ্রো-৩ থেকে একটি মটরসাইকেল চুরি করেছিলেন। এ জন্য তাকে তারা ধরে মারধর করেছে। চোর হোক আর ভালো মানুষ হোক কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। ময়না তদন্ত রিপোর্ট ও নিহতের পরিবারের অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।