মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩
আলি হায়দার, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ১নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত গত (২০ অক্টোবর) তথ্য গোপন সহ ইউনিয়ন পরিষদ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
এমন অভিযোগ জানিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাইদুজ্জামান গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসার বরাবর, নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপনসহ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ২৬ (২) ধারা লঙ্গন করে অবৈধ উপায় অবলম্বন করে বিজয়ী হয়ে দ্বায়িত্ব পালনের অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার ১নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ এনামুল হক স্থানীয় গোবরিয়া হাই স্কুলের এমপিও ভূক্ত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করে এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ২৬ (২) ধারা লঙ্ঘন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। পরে অবৈধ উপায় অবলম্বন করে তার নৌকা প্রতীকে ৫৮৩৭ ভোট পাওয়া দেখিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করান তিনি। এর পর থেকে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের দ্বায়িত্ব পালনের পাশাপাশি স্থানীয় গোবরিয়া হাই স্কুলে নিজ দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সাইদুজ্জামান অভিযোগ লিপিতে আরো উল্লেখ করেন, তিনি গত ১০ অক্টোবর রবিবার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত গোবরিয়া হাই স্কুলে (গোবরিয়া হাই স্কুল EIIN- 110508) তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টি তার সন্দেহ হলে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন চেয়াম্যান মোহাম্মদ এনামুল হক গোবরিয়া হাই স্কুলে বহু বছর যাবৎ তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করে সরকার থেকে পাওয়া ও প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া সকল প্রকার বেতন ভাতাদী উত্তোলন করে ভোগ করে আসছেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন ধরনের ভাতাদী উত্তোলন করে ভোগ করে আসছেন।
তিনি নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ২৬ (২) ধারা লঙ্ঘন করে অবৈধ পন্তায় বিজয় হওয়া মোহাম্মদ এনামুল হককে ১নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করে নির্বাচনে আনারস প্রতীকে ৫০০৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার কারী সাইদুজ্জামানকে বিজয়ী ঘোষণা করে সরকারী ভাবে গেজেট প্রকাশ করিলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হইবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তিনি।
এছাড়া বিষয়টি সদয় অবগতির জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সভাপতি কুলিয়ারচর উপজেলা শিক্ষা কমিটি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কুলিয়ারচর, উপজেলা নির্বাচন অফিসার কুলিয়ারচর, উপজেলা শিক্ষা অফিসার কুলিয়ারচর, স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কুলিয়ারচর বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করেছেন তিনি।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ও উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন-২০২১ এর রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হইবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের অনুলিপি পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগকারী আমার বরাবর কোন অভিযোগ করেননি। একটি অনুলিপি পেয়েছি। যেহেতু ইউনিয়ন পরিষদ আমার সংশ্লিষ্ঠ তাই অভিযোগের বিষয়টি আইনগতভাবে কতটুকু সত্যতা আছে তা আইনের ধারাগুলো ভালোভাবে দেখে কি করা যায় দেখবো।
এ বিষয়ে গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, কোন তথ্য গোপন নেই এবং কোন আইনের ধারা ভঙ্গ নেই। আপনারা যাচাই করে দেখেন।