জাল সনদে রামেবি-র উপাচার্যের ব্যাক্তিগত সচিব পদে ইসমাইল - Pallibarta.com

শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩

জাল সনদে রামেবি-র উপাচার্যের ব্যাক্তিগত সচিব পদে ইসমাইল

জাল সনদে রামেবি-র উপাচার্যের ব্যাক্তিগত সচিব পদে ইসমাইল

হুমায়ুন কবীর, রাজশাহীঃ
জাল সনদে দাপুটের সাথে চাকরি করছেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) লিয়াজোঁ ও প্রটোকল অফিসার এবং উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) মো: ইসমাঈল হোসেন। ইসমাঈল হোসেন এর স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিবিএ সার্টিফিকেট যাচাই করে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বরের বিপরীতে শিক্ষার্থীর নাম ঠিক থাকলেও জন্মতারিখ ও তার বাবার নামে মিল পাওয়া যায়নি। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, নামের সঙ্গে মিল রেখে প্রকৃত শিক্ষার্থীর আইডি ব্যবহার করে জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে রামেবিতে দেওয়া হয়েছে এবং এই সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে ইসমাঈল হোসেন কর্মরত আছেন। এ অবস্থায় তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।

জানা যায়, ইসমাঈল হোসেন প্রথমে রামেবিতে (১১তম গ্রেড) পিও কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে যোগদান করলেও এক বছরের মাথায় তিনি (৯ম গ্রেড) লিয়াজোঁ ও প্রটোকল অফিসার হিসেবে আবেদন করেন। তৎকালীন ভিসির সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ পেয়েজান তিনি। এরপর আলাদিনের চেরাগের মতো ইসমাঈল রাতারাতি রামেবি ভিসির পিএস হয়ে যান। গুরুত্বপূর্ণ এই পদটির অপব্যবহার করে তিনি রামেবির আওতাধীন বিভিন্ন নার্সিং ও মেডিকেল কলেজ থেকে লাখ লাখ টাকা বাগিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া গেলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ ভয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রামেবির একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, লিয়াজোঁ ও প্রটোকল অফিসার ইসমাঈল হোসেনের জাল সার্টিফিকেটসহ তার নিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিপূর্বে ২০২১ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সচিব রামেবির উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। ওই চিঠিতে ইসমাঈল হোসেন জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে চাকরি করছেন বলে উল্লেখ করলে রামেবির তৎকালীন রেজিস্ট্রার ড. মো. খালেদ স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর ইসমাঈলের সার্টিফিকেট তদন্তের জন্য চিঠি পাঠান। যেখানে ইসমাঈলের নাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তার রেজিস্ট্রেশন আইডি এবং পরীক্ষার ফলাফল উল্লেখ করে যাচাই করতে বলা হয়। তবে সেই চিঠিতে ইসমাঈলের জন্মতারিখ, বাবার নাম ও ঠিকানার বিষয়ে কোনো কিছুই জানতে চাওয়া হয়নি। রামেবির রেজিস্ট্রারের সেই চিঠি পাঠানোর ১৯ দিন পর স্টামফোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ইসমাঈল হোসেনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, সিজিপিএ নম্বর উল্লেখসহ পাসের সার্টিফিকেটটি ঠিক আছে উল্লেখ করে চিঠি পাঠান। এদিকে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যমতে, বিবিএ ০৪৮ ১৫০৪৫ রেজিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসেনের জন্মতারিখ ১৭ নভেম্বর ১৯৯৩ এবং তার বাবার নাম মো. আব্দুর রাজ্জাক মিয়া। অথচ রামেবির মো. ইসমাঈল হোসেনের ভোটার আইডি ও অন্য সনদ অনুসারে তার জন্মতারিখ ৩ অক্টোবর ১৯৯৫ এবং বাবার নাম শাহজাহান আলী।

রামেবির লিয়াজোঁ ও প্রটোকল অফিসার এবং ভিসির পিএস মো. ইসমাঈল হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এর আগেও একাধিকবার এ বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে কোনো অনিয়ম মেলেনি।’

এ বিষয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল মতিন ও রামেবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. মো. আনোয়ারুল কবির কোনো মন্তব্য বা বিবৃতি সংবাদমাধ্যমে দিতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন।

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) ভিসি ডা. এ জেড এম মোস্তাক হোসেন তুহিন বলেন, আমার ভিসি হিসেবে যোগদানের আগে লিয়াজোঁ ও প্রটোকল অফিসার এবং ভিসির পিএস মো. ইসমাঈল হোসেনের নিয়োগ হয়েছে। আমাকে আগে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে ও জানতে হবে।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০