সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
হুমায়ুন কবীর, রাজশাহীঃ
রাজশাহী নগরীতে আদালতের ১৪৫ ধারার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সরোজমিনে, গত (১৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ দিকে নগরীর উপকণ্ঠ দামকুড়া থানাধীন মধুপুর মৌজার ভাটাপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, আদালতে দায়েকৃত মামলার ৫নং প্রতিপক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান, পিতা-মোঃ রিয়াজ উদ্দিন,সাং কেশবপুর,থানা রাজপাড়া, তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে সাবাড় করছে জমি দখলের উদ্দেশ্যে।
এ সময় মোঃ মিজানুর রহমানকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ১৪৫ ধারা জারি থাকার পরও আপনি কিভাবে জমির উপরে থাকা গাছ কাটাচ্ছেন প্রশ্ন করলে, মিজানুর রহমান কোন সঠিক উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে চলে যায় এবং তার লোকজন আম গাছ, লিচু গাছ,কাঁঠাল গাছ, মেহেগুনি গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটতে থাকে। এ সময় দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুব আলম এর মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে, তিনি বলেন আমি অসুস্থ, ফোর্স পাঠিয়ে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরপর এ এস আই সেলিম সহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গাছ কাটা বন্ধ করে দেয় এবং উভয়পক্ষকে থানায় যেতে বলেন। ঐ দিনই বাদীপক্ষ থানায় গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকেও ওসির কোন দেখা পায়নি এবং বাদী পক্ষের লিখিত অভিযোগ নথিভুক্ত হয়নি বলে জানান বাদী পক্ষ।
এরই মধ্যে গতকাল সোমবার বাদীপক্ষ জানাই, জমির উপর কেটে রাখা গাছ প্রতিপক্ষ নিয়ে যাচ্ছে, পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এ বিষয়ে দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুব আলম এর মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। সেকেন্ড অফিসার এসআই আলী আকবর সব জানেন এবং এসআই আলী আকবরের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। কেটে রাখা গাছ সরিয়ে নেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমার জানা নাই ফোর্স পাঠিয়ে এখনই তদন্ত করা হবে।
ওসি আরো বলেন আমার থানায় কেউ অভিযোগ দিতে এসে এখন পর্যন্ত ফিরে যায়নি। এ বিষয়ে গত ১১/১০/২২ তারিখে জেলা রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়। মামলা নং-১০৮০পি/২০২২ (দামকুড়া)। ধারা:ফৌ:কা:বি:১৪৫ এবং মামলা নং-নং-১০৮১পি/২০২২ (দামকুড়া)। ধারা:ফৌ:কা:বি:১৪৫। বাদিদ্বয় যথাক্রমে মোঃ আলাউদ্দিন ও মোঃ আমানুল্লাহ। আসামিরা হল: (১) মোঃ রাইসুল ইসলাম, পিতা মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাং- বিন্দারামপুর, থানা ধামকুড়া।(২) মোঃ নাজমুছ সাবিদ হোসেন, পিতা-সাখাওয়াত হোসেন, সাং-কেশবপুর, থানা রাজপাড়া।(৩) মোঃ শফিকুল আলম,পিতা মোঃ ইউনুসুর রহমান, সাং- ডিঙ্গাডোবা, থানা রাজপাড়া।(৪) মোঃ সেলিম রেজা, পিতা মোঃ ইরফান আলী, সাং রাজপাড়া,থানা রাজপাড়া।(৫) মোঃ মিজানুর রহমান, পিতা মোঃ রিয়াজউদ্দিন, সাং কেশবপুর, থানা রাজপাড়া।(৬) মোঃ রফিকুল ইসলাম,পিতা মোঃ জামাল শেখ, সাং তেরখাদিয়া মধ্যপাড়া, থানা রাজপাড়া। উক্ত মামলায় মহামান্য আদালত আগামী ১/১/২০২৩ ইং তারিখের মধ্যে প্রতিপক্ষদেরকে কারণ দর্শানোর আদেশ দেন। এবং দামকুড়া থানার ওসিকে উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের কোন গুরুত্ব না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বাদীপক্ষ বলে জানান। বাদীপক্ষ আরো বলেন, আমরা দামকুড়া থানা থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা পাচ্ছি না, প্রশাসনের উদাসীনতায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
ছবিঃ ৫নং প্রতিপক্ষ মিজানুর রহমান