অবশেষে পায়রার বিদ্যুৎ ঢাকায় - Pallibarta.com

সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩

অবশেষে পায়রার বিদ্যুৎ ঢাকায়

দেশের সব থেকে বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের দুই বছর পর সেই বিদ্যুৎ অবশেষে ঢাকায় এল। বৃহস্পতিবার ঢাকার আমিনবাজার বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে সঞ্চালন সফল হয়েছে।

তবে সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ সফল হলেও এখনই পায়রার বিদ্যুৎ ঢাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে না। এই সঞ্চালন লাইনের সব ধরনের কারিগরি প্রস্তুতি ও মূল্যায়ন শেষে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হবে।

এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটির সময় মত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ না হওয়ায় কেন্দ্রটি পূর্নসক্ষমতায় উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছিল না। এতদিন অর্ধেক সক্ষমতায় উৎপাদন করা হচ্ছিল। সেই বিদ্যুৎ গোপালগঞ্জ ও বরিশাল অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছিল। পায়রার বিদ্যুৎ ঢাকায় আসার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রটি এখন পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন করতে পারবে। এতে আগামী গ্রীষ্মে লোডশেডিং মোকাবিলা সহজ হবে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ মনে করছে।

বিদ্যুতের সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে সফলভাবে চালু হয়। আগেই পায়রা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হয়েছিল।

গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার ৮২ দশমিক ৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা নদীর সাড়ে সাত কিলোমিটার অতিক্রম করা। নদীর ভেতর পাইলিং করে সেখানে বিদ্যুতের টাওয়ার নির্মাণ করা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। নদীর মধ্যে দুই পার পার করতে ১১টি উঁচু টাওয়ার নির্মাণ করতে হয়েছে।

২০১৪ সালে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) ও চায়না মেশিনারিজ কোম্পানির (সিএমসি) মধ্যে চুক্তি হয়। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুটি কেন্দ্র নির্মাণে এই চুক্তি হয়। এখানে এনডব্লিউপিজিসিএল ও সিএমসির সমান মালিকানা রয়েছে। কেন্দ্র দুটি পরিচালনার জন্য দুই কোম্পানি যৌথভাবে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) প্রতিষ্ঠা করে।

২০১৬ সালের মার্চে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। ২০২০ সালের ১৫ মে ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। এরপর ওই বছরের ৮ ডিসেম্বরে কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে। কেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের অভাবে ঢাকার আমিনবাজারে আনা যাচ্ছিল না। কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। স্থানীয়ভাবে এই বিপুল পরিমান বিদ্যুতের চাহিদা না থাকায় কেন্দ্রটি পূর্নসক্ষমতায় উৎপাদনে যেতে পারেনি।

সঞ্চালন লাইনের অভাবে পায়রার পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করতে না পারায় প্রতি মাসে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানিকে ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে পিডিবি দিচ্ছে ৮০ কোটি টাকা ও পিজিসিবি দিচ্ছে ২০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে পায়রার মত বড় কেন্দ্র উৎপাদনে আসলেও চলতি বছরের গ্রীষ্মে এ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ঢাকায় আনা যায়নি। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখে সরকার। এতে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে দেশ।

আরো পড়ুন ...

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১