শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
বিক্রয় ডট কম নামের একটি বেচাকেনার অনলাইন মাধ্যমে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে দুইটি পৃথক মামলায় জড়িয়ে পড়েছে রাজশাহীর গোলজারবাগ গুড়িপাড়ার সেলিম রেজার পুত্র সজিবুর রহমান সজিব।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর একটি রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতারকের দ্বারা হেনস্তার শিকার কলেজ পড়ুয়া যুবক সজিবুর রহমান সজিব তার সাথে ঘটে যাওয়া প্রতারক চক্রের কারসাজি গনমাধ্যমে তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে সজিবুর রহমান বলেন, আমি ২০২১ সালের জুলাই মাসের সময় আমার ফোন বিক্রি করবো বলে অনলাইন কেনাবেচার অ্যাপ বিক্রয় ডট কমে আমার ফোনের ছবি দিয়ে পোষ্ট করি।
সেই সূত্রে ঢাকার একজন ব্যাক্তি আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমার ফোনটি তিনি কিনতে চায়। তারপর তিনি আমার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার চেয়ে নেয়ার পর বেশ কয়েকবার কথা হয় তার সাথে। দুইদিন পর তিনি আমাকে ফোন দিয়ে বলেন আপনার ফোন টা আমি নিতে পারবো না, ভালো ফোন পেয়েছি ওইটা নিবো। আমি আচ্ছা ঠিক আছে বলে ফোন রেখে দিয়। তারপরে তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিয়ে বলেন আপনার (সজিব) বাসা কোথায়, আপনি কি করেন ? আমি বলি, আমার বাসা রাজশাহীতে, আমি শিক্ষার্থী। আমি বলি আপনি কি করেন, তিনি বলেন আমি ঢাকার সাভারের একটা প্রাইভেট কোম্পানি তে জব করি, পরে তিনি আমাকে বলেন যে, আমাদের এইখানে আপনি জব করবেন ? আমাদের কোম্পানি তে লোক নিবে (নিয়োগ)। আমি তাকে চাকুরি করার প্রস্তাবে সম্মতি জানালে সে আমার নিকট থেকে আমার এনআইডি কার্ড, বাবা-মার এনআইডি কার্ড, আমার জন্ম সনদ, এসএসসি মার্কশিট, এসএসসির প্রবেশ পত্রসহ যাবতীয় কাগজ পত্র চায়। আমি ওইগুলার ছবি তুলে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিই। পরে তিনি কাগজ গুলো পাওয়ার পর আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তারপরে আমার সাথে আর কোন যোগযোগ হয়নি। এঘটনার কয়েকদিন পর আমি আমার ফোনের সফটওয়্যার জনিত সমস্যার কারনে ফোনকে রিসেট করে দিই (ডিলিট)। এইভাবে কয়েক মাস কেটে যায়।
ভুক্তভোগী যুবক আরো বলেন, তারপর ২০২১ আগষ্ট মাসের প্রথম দিকে রাজশাহী পুলিশ লাইন থেকে বাধন নামে একজন পুলিশ সদস্য আমার বাসায় এসে জানায় যে, আমি নাকি আইফোন দেয়ার নাম করে পটুয়াখালীর জেলার ইয়াসিন পাটোয়ারী কাছ থেকে ৫০,০০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছি। পরবর্তীতে ইয়াসিন পাটোয়ারী আমার বাবার সাথে কথা বলে। তিনি বলেন, আপনার ফ্যামিলির যাবতীয় ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে। আমার বাবাও তিনি অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে দিয়ে বলেন ভালোই ভালো আমার টাকা আমাকে ফিরিয়ে দিবেন নাহলে আপনার ফ্যামিলির এমন ক্ষতি করবো যা আপনারা সারা জীবন আফসোস করবেন। এর পরই আমি আমার নিরাপত্তার কারণে ০৬/১২/২০২১ তারিখে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটা জিডি করি, জিডি নম্বর-২৫৪।
তারপর আবারো ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর ২৭ তারিখে কাশিয়াডাঙ্গা থানার জালাল নামক এস.আই এসে আমার বাসায় জানায় যে বরিশালের পিবিআই এ প্রতারণার মামলা হয়। পরে জানতে পারি আইফোন দেয়ার নামে ৫০,০০০/= টাকা আমার এনআইডি কার্ড, আমার বাবা-মা’র এন আইডি কার্ড দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়।
পরবর্তীতে ০২/১০/২০২২ আমার বাসায় মতিহার থানার ২ জন এস আই কে নিয়ে ঢাকা উত্তরার ইমরান নামের একজন আসে এবং তার কাছে ০১৭৯১-৭৬২৮০১ এই নম্বরে কে বা কারা সজিব সেজে কথা বলেছে এবং আবার আমার এনআইডি কার্ড,আমার বাবা-মা’র এনআইডি,আমার এসএসসির মার্কশীট ও প্রবেশপত্রসহ সব কিছু দেখিয়ে ০১৭৯১-৭৬০৭৮৫ নম্বরে নগদে ৬০,০০০ ও রকেটে ১০,০০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। তাকে এস.এ পরিবহন থেকে ০১৭৭৫-১১৭০৭২ এই নম্বর থেকে জানায় তার একটা পন্য এসেছে তখন তিনি নাকি টাকা পাঠায়।
আবার ১৯/১০/২২ তারিখে কাশিয়াডাঙ্গা থানার মুক্তারুল নামক এস.আই বাসায় এসে জানায় ঢাকা শেরেবাংলা নগরের তুহিন নামের একজন ব্যাক্তির কাছ থেকে সজিব সেজে ০১৭৪৫-৭৫৩৬৬৫ এই নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে এবং আমার এনআইডি কার্ড,বাব-মা’র এনআইডি, আমার এসএসসি মার্কশীট ও প্রবেশপত্র সহ যাবতীয় কাগজ দেখিয়ে আক্কাশ আলী নামক একজনের ০১৭৯১-৭৬০৭৮৫ এই নম্বরে ক্যামেরা দেওয়ার নাম করে ৩০,০০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী যুবক প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবী জানায়।